বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৩৬ অপরাহ্ন

News Headline :
মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন শ্যামনগরে গাছের সাথে ধাক্কা খেয়ে সড়কে ভ্যান চালকের মৃত্যু রাজশাহীর মোহনপুরে মদ পানে ৩ জনের মৃত্যু, গ্রেফতার ২ রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির

প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর চেষ্টায় নিজের ঘরেই আগুন

Reading Time: 2 minutes

রিপন কান্তি গুণ,নেত্রকোনা:
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে হত্যা চেষ্টা মামলা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজেদের পরিত্যক্ত চায়ের দোকানে আগুন লাগিয়েছেন আসামিরা। পরে এর দোষ মামলার বাদী পক্ষের ওপর চাপাতে পাল্টা মামলা করেছে আসামিরা।আগুন লাগার বিষয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস, থানা পুলিশ ও জনপ্রতিনিধির কাছে জানতে চাইলে, তারা এ বিষয়ে কেউই কিছু জানেন না বলে জানান।মামলার অভিযোগ, প্রত্যক্ষদর্শীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নোয়াগাঁও গ্রামের কাইয়ুম জমি নিয়ে বিরোধের করণে আ. মান্নানের ছেলে বাবলু মিয়াকে (৩৫) গত ৫ জুন ছুরিকাঘাত করে। গুরুতর আহত বাবলুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ নিয়ে বাবলুর চাচা শাহজাহান বাদী হয়ে থানায় কাইয়ুম, তার ভাই আবুল কালাম, খাইরুল ও চাচাতো ভাই মোজাম্মেল হকসহ চার জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।হত্যা চেষ্টা মামলার হাত থেকে রক্ষা পেতে কালামের বাড়ির সামনে থাকা তার জরাজীর্ণ চায়ের দোকানে প্রথমে লুটপাট করা হয়েছে বলে ১১ জুলাই আবুল কালাম বাদী হয়ে আদালতে পাল্টা মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রতিপক্ষের হেলাল, সাখাওয়াতসহ ৩২ জনকে আসামি করা হয়। আদালতে অভিযোগটি তদন্তের জন্য মোহনগঞ্জ থানাকে নির্দেশ দেন।গত বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) রাতে ওই লুটপাট হওয়া দোকানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এর দায়ও প্রতিপক্ষের ওপর চাপায় কালামের পরিবার।স্থানীয়রা জানায়, আগুন লাগার বিষয়টি হাস্যকর। এটি মামলা থেকে বাঁচার জন্য একটা কৌশল মাত্র। কারণ বিকালে বিদ্যুতের মিটার সরিয়ে পরে রাতে তারা আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। অনেকে আগুন না লাগানোর জন্য কালামের পরিবারের লোকজনকে বলেছে। তারা করও কথা শুনেনি। পূনরায় পাল্টা মামলা করার জন্য তারা নিজের ঘরে আগুন দিয়েছে।মসজিদের মোতায়াল্লি মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, আগুন আনুমানিক রাত তিনটার দিকে লেগেছে। ফজরের নামাজ পড়ে গিয়ে দেখি কালামের পরিবারের লোকজন আগুনের সামনে দাড়ানো। অবাক বিষয় হলো- প্রতিবেশী আগুন দেখে কেউ আগুন নেভানোর জন্য এগিয়ে আসেনি।স্থানীয় মেম্বার মাসুদ মিয়া বলেন, আমাকে রাত সাড়ে তিনটার দিকে ফোন দিয়ে আগুনের বিষয়ে জানিয়েছে কালাম। গিয়ে দেখি আগুন প্রায় শেষ পর্যায়ে। তবে আশপাশের কাউকে সেখানে দেখিনি। বিদ্যুতের তার সরানোর বিষয়টিতে তিনি অবাক হন।বড়তলী-বানিয়াহারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহাগ তালুকদার বলেন, যাদের দোকান ঘরে আগুন লেগেছে তারা আজ পর্যন্ত আমাকে বিষয়টি জানায়নি। তবে ঘটনার পরদিন দুপুরে মেম্বার বিষয়টি আমাকে ফোনে জানিয়েছিল। আগুন লাগলে তো প্রতিবেশীরা শত্রু-মিত্র সবাই নেভাতে আসে। তাদের বেলায় কেউ আসেনি। বিষয়টি রহস্যজনক। আগুন লাগার বিষয়টি পাল্টা মামলা করার জন্য হতে পারে।হত্যা চেষ্টা মামলার আসামিরা কেউ বাড়িতে না থাকায় কালামের বোন জেসমিন আক্তার বলেন, গ্রামের বাবলু নামে দুই ব্যক্তি আমাদের দোকানের সামনে ঝগড়া লাগে। আমার ভাই কালাম তাদের ঝগড়া থামায় ও তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। মান্নানের ছেলে বাবলুকে ছুরি মেরেছে আবাল হোসেনের ছেলে বাবলু। কিন্তু ঝগড়া থামানোর কারণে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার ভাই কালামসহ অন্য ভাইদের ওই মামলায় আসামি করা হয়। যে ছুরি মেরেছে সেই বাবলুকে আসামি করা হয়নি। কারণ আমাদের এলাকায় মামলা এমন উল্টোই হয়।জেসমিন আক্তার আরও বলেন, রাত ১১টার দিকে দোকানে আগুন দেয় প্রতিপক্ষের লোকজন। আমরা নেভাতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাধা দেয়। তাদের ভয়ে আগুন নেভাতে প্রতিবেশীরা কেউ এগিয়ে আসেনি। রাত অনেক হয়ে গিয়েছিল বিধায় পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ কাউকেই জানানো হয়নি।মোহনগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস অফিসের ডিউটি অফিসার মো. আনোয়ার হোসেন সোমবার দুপুরে জানান, নোয়াগাঁও গ্রামে দোকান ঘরে আগুন লাগার কোন ম্যাসেজ আমার পাইনি। গত ১৯ জুলাই পৌরশহরে বিদ্যুতের খুঁটিতে আগুন লেগেছিল। পরপর থেকে আজ পর্যন্ত উপজেলার কোথাও কোন আগুন লাগার ম্যাসেজ আমার পাইনি।মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহনগঞ্জ থানার এসআই তাজুল ইসলাম বলেন, আবুল কালাম ও কাইয়ুম এই দুই আসামি পলাতক রয়েছে। অন্য দুইজন জামিনে আছেন। আর ভিকটিম বাবলু ময়মনসিংহে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আর আগুন লাগার বিষয়টি জেনেছি। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com